শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় সরকার দলীয় লোকেরা জড়িত -ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জড়িত বলে দাবি করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

গতকাল রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে নির্মূল কমিটির নেতারা এ কথা বলেন। গাইবান্ধা-৪ ( গোবিন্দগঞ্জ) থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেন অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় একটিরও বিচার না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে বলেও মনে করে সংগঠনটি। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য আরমা দত্ত, কলামিস্ট মাহবুবুর রশিদ, লেখক আলী আকবর প্রমুখ।

গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় তদন্ত দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে।

সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় শুধু সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরাই দায়ী নয়। কখনো কখনো সরকারদলীয় লোকজনও জড়িত।

ঘাদানিক সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, গোবিন্দগঞ্জের ওরা জানিয়েছে এবং আমরাও মনে করি, সব রকমের, এই যে হয়রানিমূলক মামলাগুলো করা হচ্ছে- এগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। তাদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিত।

শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত প্রভাবিত প্রশাসনের কারণে সংখ্যালঘুরা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ।

তিনি দাবি করেন, প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জামায়াতের উপস্থিতি ও প্রচলিত আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিচার হচ্ছে না। ন্যায়বিচার পাচ্ছে না নির্যাতিত সংখ্যালঘুরা।

নাসিরনগর ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নাসিরনগরে মাদ্রাসা থেকে মৌলীবাদীরা ও হেফাজতিরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়েছে। ব্যবহার করেছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে। কিন্তু, তার তদন্ত ও বিচার নিয়ে টালবাহানা চলছে।

বিচারপতি শামসুল হুদা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে আমি দুই দিন অবস্থান করেছি। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, মতবিনিময় করেছি। একই সঙ্গে বিপর্যস্ত এলাকা ও সেখানে বসবাসকরা মানুষের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। কী অমানবিক দৃশ্য তা বলে বোঝানো কঠিন। সকল পর্যবেক্ষণ শেষে মনে হয়েছে এ ঘটনার জন্য সরকার দলীয় সাংসদ, চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক উদাসীনতা দায়ী।

বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর, কী কারণে সরকার একটি মামলারও বিচার করতে পারল না।সংখ্যালঘুদের ওপর একটির পর একটি হামলা হলেও বিচার পাচ্ছে না তারা। আইনের ফাঁক গলিয়ে প্রকৃত দোষীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই তাদের সুরক্ষার জন্য আলাদা আইন প্রণয়নেরও দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ